ডিজিটাল বেঙ্গল, ২৬ এপ্রিল ঃ মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপারকে বদলি করল নবান্ন। রাজ্য পুলিশের দাবি, এটি রুটিন বদলি। কিন্তু জেলার মানুষ মনে করছেন, সম্প্রতি ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়েছিল জেলার সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুর, সুতির মতো এলাকা। এতে রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই দুই পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়াও আগামী মাসে মুর্শিদাবাদে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরস সফরে এই দুই পুলিশকর্তাকে যাতে মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের মুখে পড়তে না হয়, তাই আগেভাগেই তাঁদের সরিয়ে দিলেন রাজ্য পুলিশের আধিকারিকরা।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় সংখ্যালঘুদের আন্দোলনে সম্প্রতি উত্তপ্ত হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলার বেশ কয়েকটি এলাকা। ভয়াবহ আকার নিয়েছিল জঙ্গিপুর, সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ। প্রাণ গিয়েছে তিন জনের। বহুমানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে নদী পেরিয়ে রাতারাতি আশ্রয় নিয়েছিল মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তলব করা হয় আধাসেনা। এই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) ও জঙ্গিপুরের (Jangipur) পুলিশ সুপারকে বদল করল নবান্ন (Nabanna)। শুক্রবার এব্যাপারে নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আন্দোলনের জেরেই এই বদলি কিনা, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। যদিও নবান্নের দাবি, এটি রুটিন বদলি।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার পদে ছিলেন সূর্যপ্রতাপ যাদব। তাঁকে পাঠানো হল কোচবিহারের নারায়ণী ব্যাটেলিয়নের দায়িত্বে। একইভাবে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এসপি আনন্দ রায়কে বদলি করে দায়িত্ব দেওয়া হল সালুয়া ইএফআরের থার্ড ব্যাটেলিয়নের। এই দুজনেই দায়িত্ব পেলেন তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ পদে। মুর্শিদাবাদে সূর্যপ্রতাপের জায়গায় এসপি পদে এসেছেন রাণাঘাটের এসপি কুমার সুন্নি রাজ। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এসপি করা হল অমিত কুমার সাউকে। তিনি কলকাতা পুলিশের ডিসি (টিপি) পদে ছিলেন। রানাঘাটের এসপি পদে পাঠানো হয়েছে আইবির আশিস মৌর্যকে। ব্যারাকপুরে পাঠানো হল কোচবিহারের নারায়ণী ব্যাটেলিয়নের বর্তমান আধিকারিক অংশুমান সাহাকে।
মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরে ওয়াকফ আইন বিরোধী আন্দোলনে পরিস্থিতি পুলিশের হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় ডাকতে হয়েছিল আধাসেনা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই কারণেই গোষ্ঠী সংঘর্ষ হওয়া দুটি এলাকার দুই পুলিশ সুপারকে বদলি করা হল বলে মনে করছে জেলাবাসী। তবে প্রশাসনের দাবি, এটি রুটিন বদলি, এর মধ্যে অন্য অর্থ খোঁজা ঠিক নয়।
2 thoughts on “মুর্শিদাবাদ কাণ্ডের জেরে বদলি দুই পুলিশ সুপার”