দিনের আলোয় নদীর বুক থেকে চুরি হচ্ছে মাটি ও বা্লি

thief of sand

ডিজিটাল বেঙ্গ্‌ল, মালদা, ১০ এপ্রিল— একেই বোধহয় বলে বিনা পুঁজির ব্যবসা। সরকারকে রয়ালিটি না দিয়ে, দিনের পর দিন প্রকাশ্যে চলছে বালি লুটের কারবার। দিনভর নদীতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জেসিবি আর ট্রাক্টর। সবমিলিয়ে দৈনিক বিপুল টাকার কারবার। এই কারবার চলছে মালদার ইংরেজবাজারের যদুপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর এলাকায়। স্থানীয়ভাবে মহানন্দার এই এলাকা পরিচিত “মেলা ঘাট” নামে। বেআইনি এই কারবারের পেছনে কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের একাংশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না স্থানীয় বাসিন্দারাও। দিনের পর দিন এই অনৈতিক ঘটনা দেখেও চুপ থাকতে হয়। প্রশাসন অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে সেই ব্যবস্থা কবে নেওয়া হবে, তা দেবতারও অজানা।

মাটি আ বালি চুরির এই কারবার চলে একেবারে দিনের আলোয়। প্রথমে নদীবক্ষ থেকে জেসিবি দিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। এরপর ট্রাক্টরে বোঝাই করে নিয়ে গিয়ে জমা করা হচ্ছে খানিক দূরে প্রায় নির্জন এলাকায়। এখানে বিপুল পরিমাণ বালির মজুত ভান্ডার দেখে সহজেই বোঝা সম্ভব কি বিপুল পরিমাণ বালি লুট হচ্ছে নদী থেকে। উচ্চমানের না হলেও এই ধুস বালির চাহিদা প্রচুর। নতুন বাড়ি তৈরির সময় ভিত থেকে রাস্তা নির্মাণ বহু ক্ষেত্রেই এইবালির ব্যবহার হয়। যা প্রতি টলি পিছু সাতশো থেকে এক হাজার টাকা হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। বালি লুটের এই অবৈধ কারবারের কথা স্বীকার করেছে জেসিবি চালক থেকে ট্রাক্টর কর্মী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানিয়েছেন,এই অবাধ বালি চুরির কারবার দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। মাঝে একবার পুলিশ হানা দিয়ে গাড়ি আটক করায় কয়েকদিন বন্ধ ছিল। পুলিশি হানা শিথিল হতেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছে বালি ও মাটিমাফিয়াদের দল। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, এই অবৈধ কারবারের পেছনে রয়েছে এলাকার তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী শিস মোহম্মদ। যিনি এলাকায় পরিচিত ‘জুলুম’ নামে। যদিও মালদার ভূমি রাজস্ব বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবহুতী ইন্দ্র জানিয়েছেন এক্ষেত্রে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে বালি চুরির ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল করলেই এইসব অসাধু ও বেআইনি কারবারের লাইসেন্স মিলে। এমনই কটাক্ষ করেছেন বিজেপির মালদা উত্তর কেন্দ্রের  জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *