ডিজিটাল বেঙ্গল, ওয়েব ডেস্ক, ৬ মেঃ দেবতা তুমি কার। এই নিয়ে সংঘাত পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা সরকারের মধ্যে। এমনকি সে সংঘাত গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। মামলা (Court Case) হয়েছে হাইকোর্টে। যদিও বিষয়টি এখনো বিচারাধীন। এর আগে রসগোল্লার জি আই ট্যাগ নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিবাদ বেঁধেছিল। কলকাতার এক ময়রা রসগোল্লা তৈরি করেছেন তা দাবি করলেও মানতে রাজি হয়নি ওড়িশা। কলকাতার রসগোল্লাকে যাতে জি আই ট্যাগ দেয়া হয় সেই বিষয়ে সুপারিশ করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা দাবি করা হয় বাংলা নয়, রসগোল্লার জন্ম আদতে উড়িষাতেই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয় হয়েছিল বাংলারই। জিআই ট্যাগ পেয়েছে এই রাজ্যে রসগোল্লা। সেই বিবাদ এখন অতীত। কিন্তু নতুন করে আবার ২ রাতের মধ্যে বিতর্ক দানা বেঁধেছে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ নিয়ে। পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার নিম কাঠের তৈরি বিগ্রহ রয়েছে। স্বয়ং মহাপ্রভু চৈতন্যদেব সেই বিক্রয় বিলীন হয়েছিলেন বলে ভক্তরা বিশ্বাস করে।
সম্প্রতি দিঘাতে পুরীর মন্দিরের আদলেই তৈরি করা হয়েছে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার মন্ত্রী মূর্তি। মার্বেল পাথরের তিন মূর্তির পাশাপাশি রাখা হয়েছে দারু ব্রহ্ম নির্মিত তিনটি বিগ্রহ। আর বিতর্কের সূত্রপাত এখানেই। ওড়িশা সরকারের দাবি পরিধবের মন্দির থেকে নিমকা চুরি করে নিয়ে এসে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। পুরীর সেবায়েত রাজেশ দ্বৈতাপতি এই কাজে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সহায়তা করেছে। এমন অভিযোগে তাকে তলব করেছে মন্দির পূরীর মন্দির কমিটি। জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলেও সূত্রের খবর।
দীঘার মন্দিরে থাকা তিন বিগ্রহ কোথাকার কাঠ দিয়ে তৈরি তা নিয়ে ইতিমধ্যে আইনি মার প্যাঁচো শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও উড়িষা সরকারের দাবিকে আমল দিতে নারাজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দীঘায় জগন্নাথ দেব সহ মলভদ্র ও সুভদ্রা যে মূর্তি তৈরি করা হয়েছে সেখানকার কাঠ এই রাজ্যের। আমার বাড়িতেই চারটি নিমকাদ রয়েছে এছাড়াও এই রাজ্যে নিম গাছের অভাব নেই। তাই জগন্নাথ দেবের তারুব্রাম্ম্য বিগ্রহ তৈরি করার জন্য ওড়িশা থেকে কার চুরি করে নিয়ে আসার কোন প্রশ্নই নেই। দীঘার জগন্নাথ মন্দির পুরোদমে চালু হয়ে গেলে পুরীর মন্দিরে ভক্তের ভিড় অনেক কমে যাবে। কমবে পর্যটকের সংখ্যা। ফলে সেই রাজ্যের আয়ও কমে যাবে। তাই নিজেদের স্বার্থেই এমন মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ তুলছে ওড়িশা সরকার। এর বিরুদ্ধে আমরা আইনের দ্বারস্থ হবো। সেখানেই বিচার পাব বলে আমরা আশাবাদী।