ডিজিটাল বেঙ্গল, শিলিগুড়ি, ৩ মেঃ ফের লাইনচ্যুত টয়ট্রেন (Toy Train)। বৃহস্পতিবার পাগলাঝোরার কাছে লাইনচ্যুত হয় নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী টয়ট্রেন। গত ছয় মাসে ১০ বারেরও বেশি লাইনচ্যুত হয়েছে টয়ট্রেন। হেরিটেজ তকমাপ্রাপ্ত ট্রেনের এহেন বেহাল দশায় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন বারবার এই বিপর্যয় হচ্ছে, কোথায় সমস্যা, জানতে রেলের অন্দরেই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম গঠন করে তদন্তের দাবি উঠেছে। এদিকে, বৃহস্পতিবারের ঘটনা জানানোই হয়নি ডিএইচআর ডিরেক্টর ঋষভ চৌধুরীকে। বিষয়টি নিয়ে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ডিরেক্টর ঋষভ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘আমার কাছে তো এরকম কোনও খবর নেই। তবুও আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
বৃহস্পতিবার ভরা যাত্রী নিয়ে দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) দিকে যাচ্ছিল টয়ট্রেন। ডিজেল ইঞ্জিনের সঙ্গে দুটি কামরা পাহাড়ে উঠছিল। পাগলাঝোরার কাছে ওপরের দিকে ওঠার সময়েই পাহাড়ে খাদের ধারে হঠাৎই লাইনচ্যুত হয় টয়ট্রেন। ইঞ্জিন সহ সামনের বগির কিছু অংশ লাইন থেকে নেমে যায়। কোনওক্রমে ব্রেক কষে ট্রেন থামান চালক। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড সকলে নেমে পড়েন। ট্রেন কতটা অংশ লাইনচ্যুত হয়েছে তা দেখার পর খবর দেওয়া হয় কার্সিয়াংয়ে সদর দপ্তরে। খবর পেয়ে কার্সিয়াং থেকে রিকভারি ভ্যান এসে ট্রেনটিকে ট্র্যাকে তুলে দিলে ফের টয়ট্রেনটি দার্জিলিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়।
গত ছয় মাসে একাধিকবার লাইনচ্যুত হয়েছে এই খেলনা ট্রেন। কিন্তু কেন বারবার এমনটা হচ্ছে। কারণ খোঁজ করতে গিয়ে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে। ব্রিটিশ আমলের পুরোনো ট্র্যাকের বদল চলছে। গোটা সেকশনজুড়ে ট্র্যাক এবং স্লিপার বদলানো হচ্ছে। আগের ট্র্যাকের কারণে একাধিকবার লাইনচ্যুত হয়েছে টয়ট্রেন। এখনও গোটা সেকশনের ট্র্যাক পরিবর্তন হয়নি। তাই যে জায়গায় অপরিবর্তিত রয়েছে সেই এলাকাগুলিতে মাঝেমধ্যে বিপর্যয় হচ্ছে বলে খবর।
পাশাপাশি ইঞ্জিনগুলিও সব শতাব্দীপ্রাচীন। তাই নিয়ম করে ইঞ্জিনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। মাসখানেক রক্ষণাবেক্ষণ না হলেই সমস্যা হতে পারে বলে জানাচ্ছেন রেলের বাস্তুকাররা। গত সপ্তাহে সুকনার কাছে যে ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছিল সেই ঘটনার তদন্তেও একই কারণ পাওয়া গিয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই লাইনচ্যুত হয়েছিল ইঞ্জিনটি।
রেল সূত্রে খবর, শতাব্দীপ্রাচীন টয়ট্রেনের ইঞ্জিনগুলিকে বিশ্রাম দিতে তিনটি নতুন ইঞ্জিন আনছে টয়ট্রেন। ওই ইঞ্জিনগুলি চলে এলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে দাবি রেলকর্তাদের। এদিকে, রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে পর্যাপ্ত কর্মীরও সংকট রয়েছে। দুজনের কাজ একজনকে করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই সমস্যা আরও বাড়ছে বলে দাবি রেলকর্মীদের একাংশের।