ডিজিটাল বেঙ্গল, নদীয়া, ৩মেঃ নদীয়া, বর্ষা শুরু হলে বেড়ে যায় গঙ্গার ভাঙন (Ganga Banks)। আতঙ্কে ঘুম আসে না গঙ্গার তীরবর্তী বসবাসকারী পরিবারের সদস্যদের। গঙ্গা ভাঙতে (Ganga Banks) ভাঙতে এতটাই কাছে চলে এসেছে যে প্রশাসন এবার আগাম ব্যবস্থা না নিলে ফুটপাতে গিয়ে বসতে হবে। চোখে জল নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ বহু মানুষ।
নদীয়ার নবদ্বীপ, শান্তিপুর, কল্যাণী থেকে শুরু করে হাজার হাজার মানুষ গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করেন। ঠিক তেমনই শান্তিপুর বিধানসভার অন্তর্গত হরিপুর, গয়েশপুর,নবলাগ্রাম পঞ্চায়েত সহ শান্তিপুর পৌরসভার একাধিক অংশে মানুষ গঙ্গার তীরবর্তী এলাকায় থাকেন। প্রতিবছরই নিয়ম করে বর্ষা শুরু হলে গঙ্গার জল বৃদ্ধি পায়। গঙ্গার জল বৃদ্ধি পেলে গঙ্গার গতি স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। আর তাতে করেই পাড় ভাঙতে শুরু করে নদীর। গঙ্গার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসকারী প্রবীণ ব্যক্তিরা জানাচ্ছেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম মনে পড়ে গঙ্গা আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থান করত। কিন্তু এখন বাড়ির উঠোন গঙ্গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবছর হয়তো বাড়িঘর সব গঙ্গার বুকে তলিয়ে যাবে। তাহলে গরু বাছুর সন্তান নিয়ে ফুটপাতে ঠাঁই নিতে হবে।
ভিডিও > রাজ্যে দশম স্থানে কালিয়াচকের আমিনা বানু
স্থানীয় এক বাসিন্দা জগন্নাথ মণ্ডল বলেন, ভোট এলে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায় পাকাপোক্তভাবে গঙ্গাপাড় বাঁধিয়ে দিয়ে যাবে বলে।কিন্তু ভোট মিটলেই সকলে ভুলে যায় নিজেদের প্রতিশ্রুতির কথা। কোনওরকমভাবে বস্তার ভেতর মাটি দিয়ে গঙ্গার পাড়ে বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বটে, কিন্তু তা জলের এক ঝাপটেই ভেঙে নিয়ে চলে যায়। তাঁর অভিযোগ। এখন কোন নেতাই মানুষের কথা ভাবেন না। কীভাবে নিজের পকেট ভরবে, সেই চিন্তাতেই মগ্ন থাকেন তাঁরা।
বিজেপি নেতা সোমনাথ কর বলেন, তৃণমূল সবসময়ই একটা প্রচার করার চেষ্টা করে, এই বাংলায় নাকি বিজেপি সরকার কোনও কাজ করছে না। তৃণমূলের এটা রাজনৈতিক এজেন্ডা। বরং তৃণমূল এই রাজ্যে কেন্দ্র সরকারের অনেক প্রকল্প আটকে দিয়েছে। কোনও কাজ করতে দিচ্ছে না। এই গঙ্গাভাঙন নিয়ে আমাদের সাংসদরা বিভিন্ন সময়ে পার্লামেন্টে প্রশ্ন তুলেছেন।আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ হলে তো লুটে খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই রাজ্য সরকার কেন্দ্রের প্রকল্পগুলিকে বাস্তবায়িত করে, তবে লুটে খাওয়ার প্রবণতা বন্ধ হয়ে যাবে তৃণমূলের।
গঙ্গাভাঙনকে জ্বলন্ত সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বিধায়ক বলেন, আমাদের সেচমন্ত্রী একশোটির বেশি প্ল্যান করে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছে। কিন্তু ২০টির বেশি কাজ হয়নি। গবাদচর চৌধুরীপাড়া থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় আমার তত্ত্বাবধানে কাজ করেছে এবং কাজ চলছে।
আগামী ২০২৬ সালে আবারো একটি বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে হয়তো আবারও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা হাতজোড় করে বলবেন, এবারে ক্ষমতাইয় এলে পাকাপোক্তভাবে গঙ্গার পাড় বাঁধিয়ে দেব। কিন্তু রাজনৈতিক টানাপোড়েন কিংবা ভোটের রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে আদেও পাকাপোক্তভাবে গঙ্গার বাঁধ আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
Arrested | মুর্শিদাবাদে অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার বৈষ্ণবনগরের দুই যুবক