ডিজিটাল বেঙ্গল, জলপাইগুড়ি, ২৪ এপ্রিলঃ Elephant Attack বন ছেড়ে লোকালয়ে আসা বন্যদের হানায় উদ্বেগ বাড়ছে। একদিকে লোকালয়ে হাতির হামলায় জেলার মেটেলি ব্লকের বড়দিঘি বনবস্তি ও বানারহাটের হলদিবাড়ি চা বাগানে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে, লাটাগুড়ি ও গরুমারার জঙ্গলের মাঝে কখনও একপাল আবার কখনও একটি দাঁতাল হাতির জাতীয় সড়ক পারাপারের জেরে জাতীয় সড়ক বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। বন দপ্তর ও পরিবেশপ্রেমীরা বারবার সকলকে সচেতন করার পরও জাতীয় সড়কে হাতি দেখতে পেয়ে তাদের কাছে গিয়ে ছবি তুলতে অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। হাতি ও চিতাবাঘের হামলায় বন দপ্তর সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দুই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। চিতাবাঘ ধরতে এলাকায় খাঁচা পাতা ও হাতির হামলা রুখতে আরও কঠোর নজরদারির দাবি জোরালো হয়েছে।
মালদায় মহারাজকে একঝলক চোখের দেখা দেখতে স্টেশনে লোকে লোকারণ্য
সোমবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ লাটাগুড়ি জঙ্গল থেকে একটি হাতি বেরিয়ে বড়দিঘি বনবস্তি এলাকায় হাজির হয়। স্থানীয় বাসিন্দা রাতি ওরাওঁ, সোমা খেড়িয়ারা জানান, লোকালয়ে হাতি বেরিয়ে আসায় তাঁরা পটকা ফাটিয়ে হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠাবার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সেই পটকার আওয়াজে স্থানীয় বাসিন্দা নান্দু খেড়িয়া (৩৬) ও তাঁর ছেলে বিনীত খেড়িয়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। হাতি দেখার জন্য তাঁরা সার্চলাইট জ্বালান। সেই সময় দাঁতালটি তাঁদের দিকে তেড়ে যায়। হাতির তাড়া খেয়ে বিনীত কোনওক্রমে পালিয়ে গেলেও হাতিটি পা দিয়ে নান্দুকে পিষে দেয়। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে পাড়া-প্রতিবেশীরা চিৎকার শুরু করে। হাতিটি স্থানীয়দের চিৎকারে জঙ্গলে পালিয়ে গেলে বন দপ্তরের লাটাগুড়ি রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁরা নান্দুকে মাল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। দাঁতালটি লাটাগুড়ির জঙ্গলের ডায়া গণেশ নামে পরিচিত। সাধারণত শান্ত স্বভাবের এই হাতিটি কেন নান্দুকে পিষে মারল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে লাটাগুড়ির রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত জানিয়েছেন। সরকারি নিয়মানুযায়ী মৃতের পরিবারকে সরকারিভাবে সাহায্য করা হবে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে, মঙ্গলবার সকালে বানারহাট ব্লকের হলদিবাড়ি চা বাগানের ফ্যাক্টরি লাইনের বাসিন্দা মনোজকুমার সাহানির গোয়াল থেকে একটি ক্ষতবিক্ষত বাছুরের মৃতদেহ মেলে। স্থানীয়দের অনুমান, সোমবার রাতে এলাকায় বৃষ্টিপাতের সুযোগে চিতাবাঘ মনোজের গোয়ালে ঢুকে বাছুরের ওপর হামলা চালায়। তবে বাছুরটি যেহেতু দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল তাই চিতাবাঘ সেটিকে নিয়ে যেতে পারেনি। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। স্থানীয়রা এলাকায় নজরদারি বাড়াবার পাশাপাশি চিতাবাঘটি ধরার জন্য খাঁচা পাতার দাবি জানান। খবর পেয়ে বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ শাখার বনকর্মীরা মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন। সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার হিমাদ্রি দেবনাথ বলেন, ‘খাবারের লোভে চিতাবাঘ যে ফের এলাকায় আসবে না সেই নিশ্চয়তা নেই। তবে বাগান কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে এলাকায় খাঁচা পাতার ব্যবস্থা করা হবে।’ বন দপ্তর সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার নির্দিষ্ট রেঞ্জে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে আবেদন করলে সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ পেতে পারে।
Elephant Attack